শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

তৃণমূলের সঙ্গে সখ্য চায় শেখ হাসিনার সরকার

কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের প্রদর্শনীতে মমতা । ডানে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু

এই সময়, কলকাতা 

ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর বন্ধন সুদৃঢ় করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সঙ্গেও সম্পর্ক মজবুত করতে চায় শেখ হাসিনার সরকার৷ তিস্তা জলবণ্টন এবং পশ্চিমবঙ্গের মাটিকে ব্যবহার করে সন্ত্রাসবাদীরা যাতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জঙ্গি কার্যকলাপ চালাতে না-পারে, তার জন্য মমতার সঙ্গেও আলাদা ভাবে কথা বলবে আওয়ামি লিগ সরকার৷

বৃহস্পতিবার পূর্বাঞ্চলীয় সেনা সদর দন্তর ফোর্ট উইলিয়ামে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে এ কথা জানান বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান৷ তবে বিকেলে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিজয় উৎসবে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তিস্তা জলচুক্তির উল্লেখ করেননি৷ ছিটমহল আদানপ্রদান নিয়ে দু’দেশের মধ্যে ভূমিচুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, ‘এটা বাংলাদেশ সরকারের সাফল্য৷ আবার আমার বাংলার সরকারেরও সাফল্য৷ যার ফলে স্বাধীনতার ৬৬ বছর পরে এখানকার ছিটমহলের বাসিন্দাদের স্বাধীনতা উপহার দিতে পেরেছি৷’

জঙ্গি কার্যকলাপের প্রসঙ্গ উল্লেখ না -করে মমতা শুধু বলেন, ‘এমন কিছু আমরা করতে দেব না বা করব না, যাতে কেউ হস্তক্ষেপ করে আমাদের চিন্তিত করতে পারে বা দুঃশ্চিন্তায় ফেলতে পারে৷ দু’দেশের মধ্যে সুসর্ম্পক ছিল, থাকবে৷ ভৌগোলিক সীমানা যা-ই থাকুক, আমাদের মানবিকতা, ভালোবাসার কোনও সীমানা নেই৷’

বাংলাদেশ হাইকমিশনের এই অনুষ্ঠানে সে দেশের শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, কলকাতার ডেপুটি হাইকমিশনার জকি আহাদ উপস্থিত ছিলেন৷

কলকাতা সফরের ফাঁকে আসাদুজ্জমান মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন, এমন খবর চাউর হয়েছিল৷ কিন্তু দমদম বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার আগে আসাদুজ্জমান জানান, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই তিনি কলকাতায় এসেছেন৷ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কোনও কর্মসূচি নেই৷

বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে পূর্বাঞ্চলীয় সদর দপ্তরে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে আসাদুজ্জমান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে ভারত যে ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল, তার কথা আমরা ভুলব না৷ আজ বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক এবং আধুনিক রাষ্ট্র৷ খাদ্যঘাটতি মিটিয়ে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার দিকে এগোচ্ছি৷ কৃষি, স্বাস্থ্য ও তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটেছে৷ সেই কাজে ভারত সাহায্য করে চলেছে৷’

বাংলাদেশের আরও এক মুক্তিযোদ্ধা তথা আওয়ামি লিগের সংসদ সদস্য আব্দুল মতিন খসরু বলেন, ‘যখন বিদেশে যাই লোকে জিজ্ঞেস করে, আপনি কোথা থেকে এসেছেন? যখন তাঁদের বলি, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি, তখন তাঁদের অনেকেই আমাকে ইন্ডিয়ার লোক বলে সম্বোধন করেন৷ বলে, আপনি গান্ধীর দেশের লোক৷’

পাকিস্তানকে কাঠগড়ায় তুলে তিনি বলেন, ‘পঞ্চাশ বছর ভারতের সঙ্গে শত্রুতা কী লাভ হল পাকিস্তানের?’

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল মহম্মদ নাজিমুদ্দিন বলেন, ‘পৃথিবীতে খুব কম দেশ আছে, যারা অন্যের জন্য আত্মবলিদান দিয়েছে৷ ভারত সেরকম একটি দেশ৷ ভারতের বর্তমান শাসকরাও বাংলাদেশকে নানা ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে৷’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন