ইন্টারনেটে নজরদারিতে চীনের নয়া তথ্যপ্রযুক্তি আইন, সমালোচনা
বহির্বিশ্ব থেকে নিজেদের
আরও আড়াল
করতে নয়া
তথ্যপ্রযুক্তি আইন আনল চীন৷ সোমবার
সে দেশের
সংসদ এই
আইনে সম্মতি
দিয়েছে৷ কমিউনিস্ট
সরকার জানিয়েছে,
জাতীয় নিরাপত্তা
ও সার্বভৌমত্ব
রক্ষাই এই
আইনের লক্ষ্য৷
নয়া আইনের
প্রবল বিরোধিতা
করেছে আন্তর্জাতিক
বণিক মহল৷
তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্বকে উন্মুক্ত
করে দিলেও
সেখানে পাঁচিল
তুলেছে চীন৷
‘গ্রেট ফায়ারওয়াল’-এ সে দেশের ইন্টারনেট
দুনিয়ায় বজ্র
আঁটুনি৷ সেই
আঁটুনি আরও
কঠোর হতে
চলেছে৷ ২০১৭-র জুন
থেকে নয়া
তথ্যপ্রযুক্তি আইন কার্যকর হতে চলেছে
চীনে৷ সোমবার
সংসদে পাশ
হওয়া আইনের
লক্ষ্য কী?
চীন সরকার
মনে করে, ইন্টারনেটে তথ্যের মহাসড়কে তারা জুড়ে
যাওয়ায় প্রতিনিয়ত
দেশের নিরাপত্তা
নিয়ে ঝুঁকি
বাড়ছে৷ যে
কোনও দিন
সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হতে পারে৷ বহিঃশত্রু
বা সন্ত্রাসবাদীরা
নিশানা করতে
পারে চীনকে৷
তাই সরকার
চায় ইন্টারনেট
ব্যবহারকারীদের গতিবিধির উপর আরও কড়া
নজর রাখতে৷
শুধু চীনের
ভিতর নয়, বিদেশ থেকেও
ইন্টারনেটের মাধ্যমে যাতে কমিউনিস্ট সাম্রাজ্যে
শত্রুপক্ষ সিঁদ কাটতে না পারে, সে জন্য
নয়া আইনকে
হাতিয়ার করতে
চায় ড্রাগনের
দেশ৷
চীনের
সরকারি সংবাদমাধ্যম
জিনহুয়া জানিয়েছে, এই আইনে
শুধু সংগঠন
নয়, ব্যক্তির
উপরও কড়া
হচ্ছে নজরদারি৷
কেউ যাতে
অশালীন ছবি
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিতে না পারে, সে জন্য
কার্যকরী ব্যবস্থা
করার কথা
বলা হয়েছে৷
কোনও ধর্ম
ও সম্প্রদায়ের
অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে দেশে অস্থিরতা
তৈরির চেষ্টাকে
নয়া ব্যবস্থার
ফলে রুখে
দেওয়া যাবে
বলে চীন
আশাবাদী৷
চীনের
নয়া আইন
প্রণয়নের পদক্ষেপ
নিয়ে প্রশ্ন
উঠছে৷ দীর্ঘদিন
ধরেই চীনে
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের উপর রাষ্ট্রের কড়া
নজরদারি রয়েছে৷
ফেসবুক ও
টুইটার বিশ্বজুড়ে
জনপ্রিয় সোশ্যাল
মিডিয়া হয়ে
উঠলেও দুনিয়ার
সবচেয়ে জনবহুল
দেশে তা
অধরা৷ চীনের
নিজস্ব ওয়েবসাইট
রয়েছে, যার
নাম উইবো৷
সেখানেও ইচ্ছা
মতো যে
কোনও লেখা
বা ছবি
পোস্ট করা
যায় না৷
বিশেষত কমিউনিস্ট
শাসনের বিরুদ্ধে
কিছু লেখা
সম্ভব নয়৷
অন্যান্য ওয়েবসাইটেও
নজর রাখে
চীন সরকার৷
এ জন্য
যে ফায়ারওয়াল
ব্যবহার করা
হয়, তাকে
সাইবার দুনিয়া
‘গ্রেট ফায়ারওয়াল’ বলে৷ তা
সত্ত্বেও বাড়তি
নজরদারির জন্য
নয়া আইনের
প্রয়োজন কেন
বোধ করল
চীন?
ইন্টারনেট
থেকে আর
কী বিপর্যয়ের
আশঙ্কা করছে
তারা, সেটা
আইনের ভাষ্যেই
স্পষ্ট৷ সমাজতান্ত্রিক
শাসনব্যবস্থার বিলোপ, জাতীয় সংহতির ক্ষতি
ও দেশভাগের
আশঙ্কায় ভুগছে
কমিউনিস্ট শাসকেরা৷ পশ্চিমের সমালোকরা বলছেন,
তিয়েনানমেনের ভূত এখনও চীনের মাথায়
রয়েছে৷ এখন
গণতন্ত্রের দাবিতে সেই বিক্ষোভের মতো
পথে নেমে
আন্দোলন না
করলেও চলে,
সোশ্যাল মিডিয়ায়
দানা বাঁধতে
পারে প্রতিবাদ৷
আদতে তাতেই
কি শঙ্কিত
চীন সরকার?
পাশ হওয়া
আইনের খসড়া
প্রকাশিত হওয়ার
পর ৪০টি
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থা প্রতিবাদ জানিয়েছিল৷
তারা সরকারের
কাছে লিখিত
প্রতিবাদও জমা দেয়৷ নয়া ব্যবস্থায়
বাণিজ্যিক সংস্থার গোপন তথ্য সরকারের
নাগালে এসে
যাবে, এই
আশঙ্কাতেই আপত্তি৷ কিন্তু, আপত্তি অগ্রাহ্য
করে খসড়ার
বিতর্কিত ধারাগুলি
নয়া আইনে
রাখা হয়েছে৷
চীনে মার্কিন
বণিকসভার চেয়ারম্যান
জেমস জিমারম্যান
বলেন, ‘এই
আইন ধোঁয়াশায়
ভরা৷ কর্তৃপক্ষের
আইন সঠিক
ভাবে ব্যাখ্যা
করা উচিত৷’
হিউম্যান রাইটস
ওয়াচের চীনা
শাখার প্রধান
সোফি রিচার্ডসনের
মন্তব্য, ‘আন্তর্জাতিক স্তরে নয়া আইনের
বিরোধিতা করা
হলেও চীন
সরকার তা
শোনেনি৷’ এ
সব সমালোচনায়
আপাতত চীনের
বিশেষ হেলদোল
নেই৷ সংসদের
স্থায়ী কমিটির
সদস্য ইয়াং
হেকিংয়ের বক্তব্য,
‘চীন ইন্টারনেটের
মহাশক্তি৷ তাই চীনের ঝুঁকিই সবচেয়ে
বেশি৷ সে
কারণেই আইনি
ব্যবস্থার মাধ্যমে ইন্টারনেটের ফাঁকফোকর বুজিয়ে
ফেলা হচ্ছে৷’
ইন্টারনেটে নজরদারির বিষয়ে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা নেয়ার সুযোগ আছে!!
উত্তরমুছুন