ঢাকার গুলশানে হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার মূল পরিকল্পনাকারী বাংলাদেশী-বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান তামিম চৌধুরী শনিবার নারায়ণগঞ্জে এক পুলিশী অভিযানে নিহত হয়েছেন।
তামিম চৌধুরীই যে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন জামা'তুল মুজাহিদীনের একটি অংশের নেতা, এবং তিনিই যে ইসলামিক স্টেটের মুখপত্র দাবিক-এ সাক্ষাৎকার প্রদানকারী শেখ আবু ইব্রাহিম আল-হানিফ - এটা প্রকাশ পাবার পর তাকে নিয়ে বহু আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রে রিপোর্ট বের হয়।
জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত তামিম চৌধুরী (বামে মৃতদেহ) |
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় তামিম চৌধুরীর জন্ম ১৯৮৬ সালে। তার পিতামাতা বাংলাদেশের সিলেটের বিয়ানিবাজারের বাসিন্দা ছিলেন, ১৯৭১এর পরে তারা কানাডা প্রবাসী হন। কানাডার ওন্টারিওর উইন্ডসর শহরে বড় হন তামিম এবং সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই স্নাতক ডিগ্রি নেন। উইন্ডসরে যারা তামিমকে চিনতেন তারা তাকে 'শান্ত স্বভাবের' বলে বর্ণনা করেছেন।
দাবিকে তামিম চৌধুরীর সাক্ষাৎকার |
তার মতে, কানাডা থেকে অন্তত ১৮০ জন অন্য দেশে গিয়ে জঙ্গী তৎপরতায় জড়িত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন সিরিয়ায় নিহতও হয়েছেন।
তামিম চৌধুরী ও কানাডা থেকে সিরিয়া যাওয়া আরো কয়েকজন জিহাদ |
বাংলাদেশে এসে তামিম চৌধুরী জামা'তুল মুজাহিদীনের একটি অংশকে নেতৃত্ব দিতে শুরু করেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে জানা যায়। উল্লেখ্য জেএমবিকেই বাংলাদেশের একমাত্র সহযোগী এবং 'প্রকৃত জিহাদি সংগঠন' বলে মনে করে ইসলামিক স্টেট - এ কথা একাধিকবার তাদের মুখপত্র 'দাবিক'এর নানা নিবন্ধে লেখা হয়েছে।
এ বছরই এপ্রিল মাসে 'দাবিক'-এ তার সাক্ষাৎকার ছাপা হয় - যাতে আবু ইব্রাহিম আল-হানিফ নামধারী তামিম চৌধুরী বলেন, তারা বাংলাদেশকে 'ক্লেদ' থেকে 'পরিশুদ্ধ' করার কাজ করছেন।
দু'বছর আগে থেকে এ সময় পর্যন্ত বাংলাদেশে একাধিক আক্রমণের ঘটনায় সংখ্যালঘু, লেখক, প্রকাশক, ব্লগার, অধ্যাপক, সমকামী অধিকারকর্মী, এবং বিদেশী নাগরিককে হত্যা করা হয়। এর পর গুলশানের হোলি আর্টিজানে হামলায় জঙ্গীদের হাতে নিহত হন ১৭ জন বিদেশীসহ মোট ২০ জন। সেখানে পুলিশের অভিযানে আক্রমণকারীরা সবাই নিহত হয়।
নারায়ণগঞ্জের এ বাড়িটিতে পুলিশি অভিযানে নিহত হন তামিম চৌধুরী |
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন