মার্কিন-পাক ঘনিষ্ঠতার অবসানে রাজনীতি বিচিত্র সব শয্যাসঙ্গী
সম্পাদকীয়, দৈনিক এই সময়, কলকাতা
পাকিস্তান বিষয়ে যে দুয়েকটি কথা সকলেই জানেন, সেই তালিকায় সর্বপ্রথম যে বিষয়টি আসতে পারে, তার নাম মার্কিন-ঘনিষ্ঠতা৷ এই সখ্যের ইতিহাস দীর্ঘ এবং বর্ণময়৷ তদানীন্তন ঠাণ্ডা লড়াই এবং রুশ-ভারত মিত্রতার কথা স্মরণে রাখলে তার একটি ভিন্ন প্রেক্ষিতও পাওয়া যায়৷
১৯৭১-এ ভারত-পাক যুদ্ধের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের সহানুভূতি কোন দিকে ছিল, সে সব তথ্য অধুনা ইতিহাস৷ এমত বৃত্তান্ত স্মরণে রাখলে এই কূটনীতিক মহোদয় আমেরিকাকে আর বিশ্বশক্তি হিসাবে গ্রহণ করতেই রাজি নন৷ বরং, তাঁর মতে ওয়াশিংটন ‘ক্ষয়িষ্ণু শক্তি’, যাকে পরিত্যাগ করে ইসলামাবাদ অধুনা রাশিয়া এবং চিনের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার কথা ভাবছে৷ এই বক্তব্যকে মার্কিন প্রশাসনের প্রতি একটি অনতিপ্রচ্ছন্ন হুমকি হিসাবে দেখলেও বিশেষ আপত্তি উঠবে না৷
কূটনীতিতে হুমকি বিষয়টি ব্রাত্য নয়৷ কঠোরে-কোমলে সে বস্ত্তটি বিভিন্ন তরফ থেকে নানা দিকে ধাবিত হয়ে থাকে৷ তৎসহ, রাজনীতি যে বিচিত্র সব শয্যাসঙ্গী তৈরি করে, সে কথাও নতুন কিছু নয়৷ তারই অনুষঙ্গে আসে পুরনো সঙ্গীর প্রতি অনাদর৷ পাক -চিন সখ্য এখন তুঙ্গে , তবে রাশিয়ার প্রতি ইসলামাবাদের অলিভ-ডাল প্রেরণের ঘটনা তাত্পর্যপূর্ণ৷ অস্যার্থ, ইসলামাবাদের বিদেশ -নীতিতে একটি বড় মাপের বদল আসতে পারে৷
কাশ্মীর নিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত মুশাহিদ হাসান সইদ |
সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পাকিস্তানের ভূমিকা বারংবার আমেরিকার কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে৷ উরি-পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে পাকিস্তান তাদের পক্ষে বিশেষ সমর্থন জোগাড় করে উঠতে পারেনি৷ নয়াদিল্লির অবস্থান সে তুলনায় স্বস্তিকর৷ সাম্প্রতিক অতীতে মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানে যে সব জঙ্গি কার্যকলাপের উত্পত্তি সে ব্যাপারে ইসলামাবাদকে কঠোর হতে হবে৷ কেরির বাণী কানে মধুবর্ষণ না করলেও নওয়াজ শরিফ এ ব্যাপারে সে দেশের সেনাপ্রধানকে কতটা কঠোর হতে বলেছেন, তা-ও দেখার বিষয়৷ নয়াদিল্লি সাগ্রহে নজর রাখছে, সন্দেহ নেই৷
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন