ঢাকায় প্রতারণার ফাঁদ!
১.
বিক্রয় ডট কমে একটা অ্যাড দেখল ফারহান, ম্যাকবুক এয়ার ল্যাপটপ মাত্র ২৫০০০টাকা। দেখেই মাথা খারাপ। এত কম কেন?
অ্যাডে আবার লেখা- বিদেশ থেকে পাঠিয়েছে ব্যবহার করতে পারিনা বলে সেল করে দিচ্ছি।
ফারহান ভেবে নিল অন্তত আর যাই হোক নষ্ট তো না, ইউজ করতে পারেনা বলে সেল করে দিচ্ছে।
অ্যাডের নাম্বারে ফোন দিতেই এক সুকন্ঠি মেয়ে ফোন ধরে বলল, বিদেশ থেকে গিফট দিয়েছে আঙ্কেল, ইউজ করা হয়না বলে কম দামে সেল করে দিবে।
ফারহান আর অত চিন্তা করল না, তাকে বলে দিল সে নিবে।
মেয়েটি জানাল মগবাজার থেকে কালেক্ট করতে হবে।
ভালো লাগলে ক্যাশ টাকা দিতে হবে।
খুশিতে বাগবাকুম হয়ে মগবাজার গেল।
ল্যাপটপ তো দূর সাথে যা ছিল সব রেখে দিল সেই অ্যাড দেয়া ছিনতাইকারী দল।
২.
সেল-বাজারে আইফোন ৫ এর অ্যাড দেখে ফোন দিল ওমর ফারুক।
দাম অনেক কম মাত্র ১৬ হাজার। লোকেশন চট্টগ্রাম।
এত কম দামে পেয়ে সাথে সাথেই ফোন। কথা হল সব কিছু ঠিক ঠাক।
৩০% টাকা এডভান্স বাকিটা এস এ পরিবহনে পণ্য পেয়ে।
অ্যাডভান্স দিয়ে দিল।
তারপর অ্যাড উধাও, নাম্বার অফ ! আর আসেনি তার আইফোন ৫।
৩.
রিক্সায় করে ফার্মগেট থেকে বসুন্ধরা সিটিতে শপিং করতে যাচ্ছিল সবুজ।
হঠাৎ রিক্সাওয়ালা নীরব এক জায়গাতে রিক্সা থামাল।
ভয় পেয়ে গেল সবুজ। রিকশাওয়ালার শরীর কাঁপছে।
লুঙ্গির কাছা থেকে একটা ছোট্ট প্যাকেট বের করে বলল এক মহিলা যাত্রী ফেলে গেছে এই গহনাটা।
স্বর্ণের! ১ ভরির উপরে হবে।
রিক্সাওলা বলে কোন দোকানে সেল করতে পারব না। সবুজ কিনবে কিনা?
যা দিবে তাই নেবে। দেখে আর না করতে পারলনা।
পকেটে ১১ হাজার টাকা ছিল, সব দিয়ে কিনে নিল।
১১ হাজার টাকায় ৪৫ হাজার টাকার উপরে পাবে।
শপিং তো হবেই সাথে একটা দামি মোবাইলও নেয়া যাবে।
বসুন্ধরা সিটি তে গিয়ে জুয়েলারি দোকানে এটার দাম জিজ্ঞেস করতেই সেলসম্যান বলে দিল আমরা ইমিটিশন কিনি না !!
৪.
ফার্মগেটে হাঁটছে রাজীব। পথে একলোক দাড়া করিয়ে বল আমার কাছে ২০ ডলার আছে, আমি ড্রাগ নেই তাই ইমার্জেন্সি টাকা দরকার।
মাত্র ৫০০ টাকা দিলেই হবে।
রাজীব ভাবল নিয়ে নেই বন্ধুর মানি একচেঞ্জ থেকে ক্যাশ করে নিব। লাভ হবে অনেক টাকা।
৫০০টাকায় নিয়ে নিল। জিজ্ঞেস করল আর আছে কিনা।
লোকটা বলল এসব সাথে নিয়ে ঘুরল পুলিশ ধরবে, জানেনই তো টানা মাল।
এক বিদেশীরে পাইছিলাম, মালদার পার্টি।
ফোন নাম্বার নিয়ে নিল রাজীব, বলল ওই ডলার যাতে কাউকে না দেয়, সব সে নিবে।
ফোন করে জানালেই কত ডলার সে পরিমাণ টাকা নিয়ে আসবে।
ওই ২০ ডলার ক্যাশ করে নিল, কোন সমস্যা হয়নি।
পরের দিন ধার টার করে ২০ হাজার টাকার মত নিয়ে আসল, ৫০০ ডলার দিবে।
এবার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে কারণ তার নেশা নাই এখন আর।
রাজীব ভাবল তারপরেও প্রায় ডাবল লাভ।
ফার্মগেট পার্কের সামনে দাঁড়িয়ে আছে, লোকটার দেখা নেই, মনে মনে ভাবছে লোকটা বেচে দিল না।
অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর দূর থেকে লোকটাকে দেখা গেল।
কাছে আসতেই একটা খাম ধরিয়ে বলল পুলিশ পিছনে পরছে তাই টাকা টা দিয়ে কেটে পরতে।
রাজীব তাই করল। বাসায় আসার আগে খুলেও দেখেনি খামে কি আছে।
কি আর হতে পারে একগাদা কাগজ ছাড়া !
৫.
গাবতলি বাস স্ট্যান্ডে দাড়িয়ে কথা বলছে রাজু, বাসা থেকে ফোন দিয়েছে মা, মা জিজ্ঞেস করছে টাকা ঠিকঠাক রেখেছে কিনা।
সেও মাকে জানাল হা টাকা ঠিক আছে, সাবধানেই যাচ্ছে সে।
যাবে আদাবর, বোনের বাসা, সেখান থেকে পরের দিন আইডিবি থেকে ছোট ভাইয়ের ল্যাপটপ কিনবে।
একটু পরেই একটা মেয়ে আসল, টুকটাক কথা বার্তায় রাজু তাকে জানাল আদাবর যাবে।
মেয়েটি বলল আমি ঢাকার তেমন কিছু চিনি না, যাবো আঙ্কেলের বাসায়, বাসাটা শ্যামলীতে।
কিভাবে যাব? রাজু প্রস্তাব দিল তার সাথেই যেতে।
শ্যামলীতে নামিয়ে দিয়ে যাবে।
মেয়েটা সামনের সিএনজি দেখিয়ে প্রস্তাব দিল সিএনজি তে যাবে এবং রাজুকে ভাড়া দিতে দিবেনা। হাসি মুখে রাজু মেনে নিল।
ফলাফল - দিনে দুপুরে পথে পিস্তল ধরে ব্যাগ মানিব্যাগ, মোবাইল সহ যা যা ছিল রেখে নামিয়ে দিয়ে সিএনজি উধাও ...!
সৌজন্যে: IT News BD 24/7
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন