রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০১৬

কলকাতা দূরদর্শনের ৪০ বছর! ঘটনার ক্লোজ-আপে ভরে উঠেছে এই স্মৃতির ক্যানভাস

অভিজিৎ দাশগুপ্ত

ভারতে টেলিভিশন সম্প্রচারের পুরোধাদের অন্যতম অভিজিৎ দাশগুপ্ত৷ তাঁর স্মৃতিকথা: ক্যানডিড ক্যানভাস


(ঢাকায় ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর পিটিভি-আজকের বিটিভি চালু হবার ১১ বছর পর চালু হওয়া) কলকাতা দূরদর্শনের দু’কুড়ি বয়স হয়ে গেল৷ টালিগঞ্জের রাধা ফিল্ম স্টুডিয়োতে যাত্রা শুরু (১৯৭৫)৷ ভগ্নপ্রায় কয়েকটা পাকা ঘর আর অ্যাসবেসটসের চালায় সাজিয়ে গুছিয়ে (১৯৮৬) বসা৷ আচমকা সরকারি সিদ্ধান্তে রাতারাতি যেমন করতে হয় আর কি! পরে অবশ্য গল্ফগ্রিনের দূরদর্শনের নিজস্ব ভবনে স্থায়ী আস্তানা৷

সেই যে কলকাতায় টেলিভিশন এল, ঘরে ঘরে দৃশ্যমান হল দূর থেকে পাঠানো চলমান ছবি৷ সব ঘরে নয়, কারণ টেলিভিশন সেট তখন বহুমূল্য৷ নতুন মিডিয়ার প্রখর আলো ঢুকল ড্রয়িংরুমে৷ সেই সময়ে কলকাতা দূরদর্শনে যাঁরা চাকরি জীবন শুরু করেছিলেন, তাঁদের অবসর জীবন এখন স্মৃতিযাপনের কাল৷

আর স্বেচ্ছাবসরের দু’দশক পর অভিজিৎ দাশগুন্ত যা করেছেন, তা নিতান্তই স্মৃতিযাপন নয়, রীতিমতো উদযাপন৷ দূরদর্শনে তাঁর কর্মচঞ্চল জীবনের (তাও দু’দশক) অভিজ্ঞতার এক বিস্তৃত ক্যানভাস রচনা করেছেন তিনি, যার পাতায় পাতায় মুক্তমনের উন্মোচন৷ স্মৃতি এখানে জাগ্রত৷ ঘটনা আর অভিজ্ঞতার বিন্যাসে ছোটো পর্দার এক ধারাবাহিক যেন এগিয়ে চলেছে৷ কখনও ফ্ল্যাশব্যাক, আবার ফ্ল্যাশ ফরোয়ার্ড৷ জীবন্ত হয়ে উঠেছে সব ঘটনা আর চরিত্র৷ সেই যুগে দূরদর্শনে যাঁরা তাঁর সঙ্গী ছিলেন, বইটি পড়তে পড়তে তাঁদের স্মৃতিও চঞ্চল হয়ে উঠবে৷

দূরদর্শনে অনুষ্ঠান বিষয়ে আলোচনায় (বাঁ  থেকে) অভিজিৎ দাশগুপ্ত, আশা ভোঁসলে ও রাহুলদেব বর্মন
স্মৃতি যে এখানে জাগ্রত--- এ কথা বলার কারণ দুটো৷ এক, এখানে বেশির ভাগ ঘটনাই বিন্যস্ত হয়েছে সংলাপে, চরিত্ররা মুখোমুখি কথা বলছেন, ঘটনা জীবন্ত হয়ে উঠছে৷ দুই, সেই সব ঘটনারই প্রমাণপত্র বইয়ের পাতায় পাতায়৷ দুর্লভ ফোটোগ্রাফ, অফিস অর্ডার, আইসিএম, মেমো, চিঠি, কোনও রিপোর্টের অংশ, শংসাপত্র, পুরস্কারের ঘোষণা সংক্রান্ত টেলিগ্রাম, সংবাদপত্রের ছিন্ন অংশ, রিভিউ, ঘটনার ক্রিয়া -প্রতিক্রিয়ার সমর্থনে নানা নথি৷ তাঁরও সংখ্যা পাঁচশোর কম নয়৷

পদমর্যাদার কথা বাদ দিলাম, সব কিছুর যোগফলে সবাই নিশ্চয়ই অভিজিত্ দাশগুন্তকে একজন উদ্যমী কর্মচঞ্চল টেলিভিশন প্রযোজক হিসেবেই ভাবতে চাইবেন৷ তিনি অনেক দিন দূরদর্শনের বাইরে৷ তারও বয়স হল এক কুড়ি৷ এই সময়েও তিনি তাঁর স্বভাব-ক্ষিপ্রতায় উদ্ভাবনে একজন তরুণকেও হার মানাতে পারেন৷ প্রযুক্তির হাইমোডে চলেন তিনি৷ তাঁর সান্নিধ্যে যাঁরাই এসেছেন আন্দাজ করতে পারবেন টেলিভিশন নামক এক জীবন্ত মাধ্যমের উত্তাপে তিনি কেমন উত্তন্ত থাকেন৷ আর তাতেই তাঁর শিরদাঁড়া সোজা থাকে, ব্যক্তিগত বিপর্যয়েও স্থির থাকতে পারেন, হূদযন্ত্রকে শাসন করতে পারেন৷

দূরদর্শনে তাঁর কাজ, অনুষ্ঠান প্রযোজনা, তথ্যচিত্র নির্মাণ, বড়ো বড়ো ইভেন্টের সরাসরি সম্প্রচারে কুশলী নেতৃত্ব (জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের খেলা, উত্সব, সাধারণ নির্বাচন) কলকাতা দূরদর্শনেরই সম্মান বাড়িয়েছে৷ সেই আদিযুগে কম-সংখ্যক ক্যামেরা, সীমিত পরিকাঠামো, সরকারের বিচিত্র সরদারিপনার মাঝে সাফল্য ও সম্মান আদায় করা ছিল একটা চ্যালেঞ্জ৷ এইসব সরদারিপনা আর নেতিয়ে পড়া ঢিলেঢালা কর্ম সংস্কৃতির মধ্যে কী ভাবে কাজ করেছেন, সেই সব গল্প অনাবিল স্রোতের মতো বলে গেছেন লেখক৷ ঢিলেঢালা কর্মসংস্কৃতিকে তিনি বলেছেন ‘বাবু সিনড্রোম’৷ লর্ড মেকলেকে স্মরণ করেছেন বার বার৷

১৯৮২-র এশিয়াডের লাইভ সম্প্রচারের কথা মনে পড়বে অনেকেরই৷ অভিজিৎ দাশগুন্ত সহকর্মীদের নিয়ে যে কাজ করেছিলেন, তা দর্শকদের প্রভূত প্রশংসা কুড়িয়েছিল৷ এমনি করেই ইন্ডিয়ান ওপেন গ্রঁপ্রি, ন্যাশনাল গেমস, ভিন্টেজ কার র্যালি, ক্রিকেট, এশিয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপ সম্প্রচারের নেপথ্য কাহিনি পড়তে পড়তে মনে হয় ডায়েরির পাতা ওল্টাচ্ছি৷ ক্যামেরাম্যান সাউন্ড রেকর্ডিস্ট, লাইটিং অ্যাসিস্ট্যান্ট, এডিটর, প্রোডাকশন প্যানেলের সহযোগী ইঞ্জিনিয়ার, কলকাতা ও দিল্লির কর্তাব্যক্তি --- সকলেই জীবন্ত চরিত্র৷ নাটকীয় উপাদানে ভরা৷ সংলাপময় উপস্থাপনায় সেই নাটকীয়তার বেগ সংযত থেকেছে লিখনশৈলীর গুণে, কথ্যভঙ্গির সরলতায়৷

দূরদর্শনে যত কাজের দায়িত্ব তাঁর ওপর বর্তেছে, তার সূত্রে লেখা যে দৃশ্যপট আমাদের সামনে এনেছেন, তা দিয়ে এই সম্প্রচার -মাধ্যমটির একটি ক্যারিয়ার গ্রাফও তৈরি হতে পারে৷ বিশেষ করে প্রথম দেড় দশকে (বেসরকারি চ্যানেল আসার আগে পর্যন্ত) দূরদর্শন ছিল নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী৷ ক্রমেই টেলিভিশন রঙিন হয়েছে৷ নতুন প্রযুক্তি এসেছে, ফিল্ম -ক্যামেরার, যুগ পেরিয়ে সংবাদের জন্য এসেছে ইএনজি, এডিটিং স্যুট বদলে গেছে৷ এসবই অধিগত করে নিতে হয়েছে দূরদর্শনের সর্বস্তরের কর্মীদের৷ অনুষ্ঠান ও সরাসরি সম্প্রচারকে উচ্চতায় পৌঁছে দিতে সচেষ্ট থাকতে হয়েছে প্রযোজকদের৷ অভিজিত্ দাশগুন্ত ছিলেন সহকর্মীদের কাছে এই দৃষ্টান্ত৷ --- আবার দূরদর্শনের বাইরে এসেও কি তা নয়? বড়ো ইভেন্টে কাজের আহ্বান এসেছে, একের পর এক তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন, এখনও করছেন, আন্তর্জাতিক টেলিভিশন সংস্থার পরামর্শদাতা হয়ে কাজ করছেন ; কলকাতায় টেলি -ফিল্মোত্সবের (ইনপুট) আয়োজন করছেন প্রতি বছর৷ তার চেয়েও বড়ো কথা, অত্যন্ত ছোটো পরিসরে ‘বাংলা এখন’ নামে একটি চ্যানেল চালু করেও দর্শকদের নজর কেড়েছিলেন৷ তারও সাফল্য প্রমাণ করেছেন বেসরকারি সংবাদ -চ্যানেলগুলির প্রতিযোগিতার মাঝে৷ সেটা ঘটেছিল চটুল রিয়েলিটি শো বা ভাগ্য -নির্মাণ ঋষিদের (জ্যোতিষী) কুসংস্কারগুলির কাছে আত্মসমর্পণ না করেই৷ এইখানে হাতে কলমে কাজ -শেখা অনেকেই আজ বিভিন্ন চ্যানেলে সুনামের অধিকারী৷ কলকাতায় যে বিভিন্ন চ্যানেল পরবর্তীকালে এসেছে, সেখানেও অনেক ক্ষেত্রেই অভিজিত্ দাশগুন্তের পরামর্শ, সহায়তা ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়েছে৷

‘বেসরকারি চ্যানেলের তুলনায় দূরদর্শন অনেক পিছিয়ে’--- এমন সমালোচনা সত্ত্বেও মানতে হবে --- সরকারি উদাসীনতা, তার নীতিহীন নীতি আর ‘বাবু সিনড্রোম’ থেকে মুক্ত হতে পারলে দূরদর্শনের অগ্রণী অবস্থান কারও কেড়ে নেওয়া সম্ভব ছিল না৷ প্রসার ভারতীও সে দিক থেকে না ঘরকা না ঘটকা৷

কলকাতা দূরদর্শন এক অর্থে জরুরি অবস্থারও সন্তান৷ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে এই বিশেষ আপত্কাল ঘোষণার দেড় মাস পর এখানে দূরদর্শনের সূচনা৷ সরকারি বিশ দফা কার্যক্রমের প্রচারে দূরদর্শন তখন উপহাসের পাত্র৷ অঘটিতকে জোর করে ঘটানোর বাধ্যতায় যে কী যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে অকপটে তার কিছু গল্পও শুনিয়েছেন অভিজিত্ দাশগুপ্ত৷ সেই সময়ে দূরদর্শনে কাজের সুবাদে বর্তমান পর্যালোচকেরও আছে তেমন অভিজ্ঞতা৷ ১৯৭৭ সালে যখন জনতা সরকার ক্ষমতায় এল, তার কয়েক মাস পরে ডিরেক্টরের থেকে এক নির্দেশ আসে (আতঙ্কিত হয়ে?) যে জরুরি অবস্থার সমর্থনে রেকর্ড করা ছবি, অনুষ্ঠান সরিয়ে ফেলতে হবে৷ প্রমাণ হিসেবে সেই নির্দেশপত্রটিও হাজির করেছেন লেখক৷ শোনা যায়, সেই সব অনুষ্ঠান গোপনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল৷

ওই আঁটসাঁট ব্যবস্থার মধ্যেই একজন দূরদর্শন প্রযোজককে ভাবতে হয়েছে নতুন ভাবনা৷ তারই ফসল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মান -স্বীকৃতি আদায় করা অভিজিৎ দাশগুন্তর সব তথ্যচিত্র: ভোগালি বিহু, মধুবনী চিত্রকলা, বাংলার বাউল, সংবাদপত্রের দুশো বছর (যদিও ভুলবশতই হয়তো লেখা হয়েছে একশো বছর৷ জেমস অগাস্টাস হিকি ‘বেঙ্গল গেজেট’ প্রকাশ করেন ১৭৮০ সালে৷) ওড়িশার পোষমানা বাঘিনী খৈরি -কে নিয়ে যে ছবি তৈরি হয়েছিল তারও কাহিনি শুনিয়েছেন তিনি৷ আর তারই অনুষঙ্গে ফিরে ফিরে গেছেন তাঁর কৈশোরে যৌবনে বেড়ে ওঠা গড়ে ওঠার দিনগুলোতে৷

দূরদর্শনে যোগ দেবার আগের সাত -আটটা বছর তো ফোটোগ্রাফ নিয়ে মজেছিলেন৷ প্রথম সারির সংবাদপত্রে ম্যাগাজিনে ছড়িয়ে আছে সেই সব ছবি৷ বাবার বন্ধু শম্ভু সাহার (রবীন্দ্রনাথের আলোকচিত্রী) সান্নিধ্যেও এসেছিলেন৷ বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে যুদ্ধের ময়দানে ঘুরেছেন, শরণার্থীদের ছবি তুলেছেন৷ মৃণাল সেন তার কিছু ছবি ব্যবহারও করেছিলেন ‘কলকাতা ৭১’ ছবিতে৷ সত্যজিত্ রায় বলেছিলেন : ‘অ্যান অ্যালার্ট সেন্সিটিভ অ্যান্ড ইনটালিজেন্ট ইয়ংম্যান উইথ ফাইন ফ্লেয়ার অফ স্টিল ফোটোগ্রাফি৷’ সত্যজিৎই তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন কার্তিয়ের ব্রেসোঁর ফোটোগ্রাফির বই৷ ছেলেবেলায় দুরন্তপনার দিনগুলোতে মীরা দেববর্মণ, শচীন দেববর্মণের স্নেহ পেয়েছেন, অভিজিতের খেলারও প্রিয়তম সঙ্গী ছিলেন রাহুল (পঞ্চম )৷ যদিও শচীন কর্তার ওপর একটি তথ্যচিত্রের প্রস্তাব দূরদর্শন কর্তৃপক্ষ নাকচ করে দিয়েছিল৷ কারণ মুম্বইয়ে গিয়ে শুটিং এর খরচ বহন করা সম্ভব নয়৷

পরিবার ও প্রিয়জনদের নিয়ে আরও অনেক গল্প আছে, গল্পের ভেতরে আছে অনুগল্প৷ সেই সব গল্পে আছে অফুরন্ত উদ্যম আর চ্যালেঞ্জ নেবার উৎসব৷ দূরদর্শনে যখন বেসরকারি অনুষ্ঠান একটু একটু করে ঢুকছে, প্রণয় রায়ের ‘ওয়ার্ল্ড দিস উইক’ অথবা ১৯৮৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে দূরদর্শন আর এন ডি টিভির যে যৌথ অনুষ্ঠান, দূরদর্শনের হয়ে তারও চ্যালেঞ্জ নিতে হয়েছে অভিজিত্ দাশগুপ্তকেই৷ সেই সময়ের সংবাদপত্রে যেমন তার প্রভূত-প্রশংসা, তেমনই প্রণয়-পত্নী রাধিকা রায়ের চিঠিতেও প্রকাশ পেয়েছে কৃতজ্ঞতা৷

শিরদাঁড়া সোজা রাখাটাও তো একটা চ্যালেঞ্জ৷ যেমন মন্ত্রীর আবদার: একই প্রোডিউসারের ফিচার ফিল্ম ঘন ঘন দূরদর্শনে দেখাতে হবে, তাঁর পছন্দের গায়িকাকে অডিশনে ফেল করলেও নাম বদলে আবার অডিশন নিতে হবে, দূরদর্শনের দুই উপস্থাপিকাকে পাঠাতে হবে বারাসতের বাড়িতে --- একটিও নির্দেশ না মানার শাস্তি : বদলি ভূপালে, যেখানে দূরদর্শন কেন্দ্র তখন চালুই হয়নি৷ স্বেচ্ছাবসরের অনেক পরে মন্ত্রীকে এর একটা মুখোমুখি উত্তর দিয়েছিলেন অভিজিত্ দাশগুন্ত৷ অভিজিত্ তখন ‘বাংলা এখন’ চ্যানেলের চালক৷ এই তথ্য -সম্প্রচারমন্ত্রীই বেসরকারি চ্যানেলের জন্য পথ খোলার অজুহাত খুঁজতে বলেছিলেন : ‘যদি আমরা খোলামেলা অনুষ্ঠানের পথে না যাই, একদিন আসবে যখন দূরদর্শনের অনুষ্ঠান কেউ দেখবে না৷’কলকাতা দূরদর্শনে কর্মচঞ্চল দিনগুলোর কথা বলতে বলতে অনেক বারই ক্ষোভ ঝরে পড়েছে অভিজিত্ দাশগুন্তর মাথা চাপড়ানো আফশোস, কোথায় হারিয়ে গেল বহুমূল্য সেই সব অনুষ্ঠান? আদৌ কি তার রেকর্ড আছে কোনও? অবহেলায় কত মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে, তারও সচিত্র নিদর্শন তুলে ধরেছেন তাঁর বইতে৷ রাগে অভিমানে বলেছেন : ‘দূরদর্শনে সরকারি অর্থের এই যে অপচয়, এ নিয়ে পুরস্কার পাবার মতো একটা তদন্তমূলক তথ্যচিত্র তৈরি হতে পারে৷’ এই ক্ষোভ কিন্তু বিরূপতা থেকে নয়, ভালোবাসা থেকেই৷ কারণ টেলিভিশন তাঁর কাছে পেশা নয়, প্যাশন৷ দূরদর্শনের কাছে ঋণও স্বীকার করেছেন বার বার৷

শুধু একটা কথাই মনে হয়েছে, স্মৃতির নানা দৃশ্যপটে এত চরিত্রের আনাগোনা, সংগঠনের নাম ফিরে ফিরে আসছে, শেষে একটা নির্দেশিকা থাকলে যেন বড়ো ভালো হত৷ উপশিরোনাম থাকলেও সূচিহীন এই পাঁচশো পাতার বইয়ে পাঠক সেই সব দৃশ্যপটে চাইলে ফিরে যেতে পারতেন সহজেই৷ তবু বলব, এমন একটা বইয়ে দু-একটা সামান্য তথ্যগত ত্রুটিও ভেসে গেছে, তার অভিনব উজ্জ্বল বিন্যাসে৷ লংশটে নয়, ঘটনার ক্লোজ-আপে ভরে উঠেছে এই স্মৃতির ক্যানভাস৷

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন